এক জঙ্গনামা। লড়াইটা এক অক্টোপাসের সাথে। নীলরঙা অক্টোপাস। ব্যক্তিসত্তা, সমাজমানসকে প্রতিমুহূর্তে আগের চেয়ে আরও জোরে পেঁচিয়ে নিচ্ছে আট পায়ে। সমস্যা হলো অক্টোপাসটি একটি ট্যাবু (taboo)। তার নাম নেয়া যায় না, আলোচনা করা যায় না, তার ক্ষতি চিৎকার করে জানিয়ে দেওয়া যায় না সবাইকে। এই সুযোগে সে আরও প্যাঁচ কষে চলেছে। মড়মড় করে ভাঙছে পরিবার, ভাঙছে সমাজ, ভাঙছে আইন, মূল্যবোধ-সুকুমারবৃত্তি, ভাঙছে জীবন—এক একটা স্বপ্ন খানখান হয়ে ভেঙে যাচ্ছে। যেগুলো ভাঙেনি ঝুরঝুরে হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটু ঝাঁপটার অপেক্ষায়।
পর্ন, পর্নোগ্রাফি, ব্লু ফিল্ম। একটা অসুখ। প্রতিটা গোঁফের রেখা গজানো কিশোর মুখের দিকে তাকান, প্রতিটা উদ্দাম কলেজপড়ুয়া স্বপ্নবাজ তরুণ, ভার্সিটির চোখ নামিয়ে চলা প্র্যাক্টিসিং ছাত্র, গালফোলা দুই বেণিওয়ালা বাচ্চা মেয়ে, জ্যামে ঝুলে থাকা প্রতিটি কর্মজীবীর ঘর্মাক্ত মুখের দিকে তাকান। বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও এটাই সত্যি। এক কঠিন দুরারোগ্য অসুখে ভুগছে প্রতিটি মানবসন্তান। অথবা যেকোনো সময় মহামারির গ্রাস হবার অপেক্ষায়। আপনার কেবল দাঁড়াতে শেখা মেয়েটার দিকে একটু তাকান। সদ্যভূমিষ্ঠ ছেলেটার দিকে তাকান। কী এক মড়কওয়ালা শ্মশান রেখে যাচ্ছেন তার জন্য!
এখন ঠিক এই মুহূর্তটিতে আপনার জন্য সবচেয়ে জরুরি এই বইটি পড়া, অক্সিজেনের চেয়েও। বিশ্বাস করুন—হ্যাঁ, আপনার শ্বাসের চেয়েও। আপনাকে বুঝতে হবে, আপনাকে জাগতে হবে; না হলে অনেক দেরি হয়ে যাবে। অনেক দেরি। আপনাকে স্মরণ করতে হবে, “আপনি একজন যোদ্ধা”। প্রবাহতাড়িত একটি “গড্ডল” না আপনি। একটু মনে করার চেষ্টা করুন, আপনি যুদ্ধ করার জন্যই জন্ম নিয়েছেন। আর এ যুদ্ধে আপনি জিতবেন, আপনাকে জিততে হবে। এ জয় ছাড়া আপনার হাতে আর কোনো অপশন নেই। দমবন্ধ এই পৃথিবীতে আপনার খুঁজে নিতে হবে মুক্ত বাতাস। যেখানে চোখবুজে লম্বা শ্বাস টেনে নিলে নির্মল শীতল বাতাস পূর্ণ করবে আপনার প্রতিটি অ্যালভিওলাস। পরবর্তী প্রজন্মের অভিশাপের আর্তনাদ থেকে বাঁচতে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে তাদের অধিকার—একঝলক মুক্ত বাতাস।
0 Comment to "মুক্ত বাতাসের খোজে"
Post a Comment